Ajker Kashiani

কাশিয়ানীতে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে পৈতৃক সম্পত্তি দখলের অভিযোগ

আজকের কাশিয়ানী ডেস্ক:- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে একটি পরিবারের ছয় ভাই-বোনকে বঞ্চিত করে পৈতৃক সম্পত্তি দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে আপন বড় ভাই এবং তাঁর মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে। পরিবারের সম্পত্তি বঞ্চিত অন্য সদস্যদের সম্পত্তি থেকে দূরে রাখতে তাদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে একাধিক হয়রানি মূলক মামলা।

বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ বৈঠক করেও কোন সমধানে আসতে পারেনি পরিবারের দুটি পক্ষ। স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেয়া সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা করছেন না দখলদার বড় ভাই এবং তাঁর মেয়ে জামাই। এতে দুই পক্ষের মধ্যে অসন্তোষ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানান, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল গ্রামের মোসলেহউদ্দিন আহমেদ স্ত্রী ও সাত সন্তান রেখে ১৯৭৫ সালে মারা যান। সন্তানদের জন্য অন্যান্য জমির সাথে ২৫ শতাংশ জমির উপর বসত ভিটা রেখে যান। সন্তানরা বর্তমানে কেউই গ্রামে থাকেন না। কেউ ঢাকায় আবার কেউ প্রবাসে থাকেন। সন্তানরা বাবার স্মৃতি এবং ঐতিহ্য ধরে রাখতে পৈতৃক ভিটায় বাবার নামে নামকরণ করে বাড়ি করার সিদ্ধান্ত নেন। হঠাৎ করে এ কাজে বাঁধা হয়ে দাড়ায় মোসলেহউদ্দিনের বড় ছেলে মহিবুদ্দিন আহমেদ। পৈতৃক বসত ভিটা তাঁর একার বলে দাবি করে বসেন। অন্য দিকে অন্য সন্তানরাও তাদের পৈতৃক অংশিদারিত্ব দাবী করেন। এ নিয়ে শুরু হয় ভাই বোনদের মধ্যে দ্বন্দ। এ দ্বন্দে তাদের সাথে কোমর বেঁধে যোগদেন বড় ভাইয়ের জামাতা অ্যাডভোকেট জাকারিয়া হাবিব অয়ন। শ্বশুরের সম্পতি পেতে তিনি তাঁর চাচা শ্বশুরদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দেন। যা এখন বিচারধীন রয়েছে।

পরিবারের দুটি অংশের বিবাদমান সমস্যার মিমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গন্যমান্য ব্যক্তিসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও। দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয়কে জমির দখলে যেতে নিষেধ করেছিলেন কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সে নিষেধের তোয়াক্কা না করে বসত ভিটা দখল করে বাড়ির সংস্কার কাজ করছেন বড় ভাই মহিবুদ্দিন এবং তাঁর মেয়ে ও জামাতা। রাতে আঁধারে বাড়ির মূল সাইনবোর্ড নামিয়ে টাঙিয়ে দিয়েছেন নিজের নামে নতুন সাইনবোর্ড।

স্থানীয়রা আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে পরিবারের দুটি অংশের মধ্যে এক প্রকার উত্তেজনাও বিরাজ করছে। এ ধরনের পরিস্থিতে যে কোন সময় ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা।

গত সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) আবার পরিবারের মুরব্বি, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ বৈঠক হলেও বিবাদমান সমস্যার সমাধানে আসা সম্ভব হয়নি।

এলাকাবাসীর চাওয়া যেহেতেু সম্পত্তির উপর সব ভাই-বোনদের প্রাপ্যতা আছে তাই সকলেরই যেন তাদের ন্যায্য পাওনা পায়। তাতে সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের দাবি যেহেতু সম্পত্তি তাদের বাবার তারা সবাই এর দাবিদার। তাদের বড় ভাই তাদের বঞ্চিত করে একাই ভোগ দখল করার চেষ্টা করছে। এটা অন্যায়।

রাতইল ইউপি চেয়ারম্যান আঞ্জুরুল ইসলাম আঞ্জু বলেন, আমরা একাধিকবার দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাদের বড় ভাই মহিউদ্দিন তা না মেনে একাই এ সম্পত্তি ভোগ করার চেষ্টা করছেন। তারা শালিশ মানছেন না।

শালিশের সভাপতি খান আকরাম বলেন, আমরা দুই পরিবারের সম্পত্তির বিবাদ মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বড় ভাই তার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। আমারা চাই সবাই মিলেমিশে শান্তিতে তাদের পৈতৃক সম্পত্তি ভোগ করুক।

এ বিষয়ে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেহেদী হাসান বলেন, বিষয়টি যেহেতু দেওয়ানী আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে জমিতে না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।