প্রতিনিধি কাশিয়ানী:- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউপি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল, এজেন্টদের বের করে জাল ভোট দেয়া, প্রিসাইডিং অফিসারকে মারধর ও জোর করে ব্যালট পেপারে স্বাক্ষর এবং দায়িত্বরত পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলার ২৮ দিন অতিবাহিত হলেও কোন আসামী গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
তবে মামলার অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান বিএম হারুন অর রশিদ পিনুকে মামলা থেকে বাঁচাতে নানা পরিকল্পনা ও উচ্চ মহল থেকে তদবির চলছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
গত ১৩ নভেম্বর প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ সেলিম সরদার বাদী হয়ে সরকার দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিএম হারুন অর রশিদ পিনুসহ অজ্ঞাত ২২৫ জনকে আসামী করে কাশিয়ানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এরআগে গত ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের দিন নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএম হারুন অর রশিদ পিনুর নেতৃত্বে ২০০/২২৫ জন লোক লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্রনিয়ে রাতইল ইউনিয়ন পরিষদ ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা অন্যান্য প্রতীকের এজেন্টদের গালিগালাজ করে বুথ থেকে বের করে দেন। গালিগালাজ করতে নিষেধ ও বিষয়টি মোবাইল ফোনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের অবগত করলে প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ সেলিম সরদারকে মারধর করেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিএম হারুন অর রশিদ পিনু ও তার সমর্থকরা। এমনকি সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার নাজমা নাঈমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে ব্যালট পেপারে স্বাক্ষর করিয়ে নৌকা প্রতীকে সীল দিয়ে ব্যালটবাক্সে ঢুকান তারা। এ সময় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত নুরুল আমিন, হেলাল ও সোলাইমান নামের তিনজন পুলিশ সদস্য এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করে আহত করা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচন কার্যক্রম ব্যাহত ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে বাঁধা প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় দুদিন পর কাশিয়ানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই প্রিসাইডিং অফিসার।
এদিকে, মামলা দায়েরের ২৮ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার বাদী মো. সেলিম সরদার বলেন, ‘পুলিশ তাদের গতিতে কাজ করছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত বিচার দাবি করছি।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান এক মাসেও কোন আসামী গ্রেফতার করতে পারেননি স্বীকার করে বলেন, ‘মামলাটি চলমান ও তদন্তাধীন। একজনের নাম উল্লেখ করে মামলা, বাকিগুলো অজ্ঞাত। যাচাই-বাছাই করে তদন্ত চলছে। যারা প্রকৃত দোষী তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
কাশিয়ানী থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ রায়হান ‘আজকের কাশিয়ানী’কে বলেন, ‘মামলার এজাহারে শুধুমাত্র একজনের নাম আছে। বাকীগুলো অজ্ঞাত। আমরা যতোটুকু জানি তিনি সম্ভবত উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে আছেন। বাকি অজ্ঞাতনামাদের ধরতে গেলে বিপদ, আপনিতো বুঝেন না ধরলেও বিপদ।