রেলপথ মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘আমার রেলতো কাউকে ধাক্কা দেয় না, অন্যরা রেলকে ধাক্কা দিয়ে যদি অঘটন ঘটায় তার জন্য কি রেল দায়ী? রেল যখন চলাচল করে তখন আশপাশ দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। রেল রেলের লাইনে চলে, অন্য কেউ রেলে সাথে ধাক্কা খাবে তার দায়িত্ব রেলে উপর যাবে এটা যুক্তিসঙ্গত নয়। রেল কাউকে ধাক্কা দেয় না, অরেকজন এসে ধাক্কা দিয়ে রেলকে অনিরাপদ করছে, এর দায়িত্ব রেল নিবে না।’
সোমবার (০১ আগস্ট) দুপুরে গোপালগঞ্জ রেল স্টেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘরের দেশব্যাপী প্রদর্শিনীর শুভ সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, রেলে ব্যারিকেট বা গেট দেয়া হয় অন্যের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য না। রেলকে কেউ যাতে অনিরাপদ করতে না পারে তার জন্য রেলের নিরাপত্তার জন্যই এসব গেট দেয়া হয়। রেলের উপর দিয়ে পথ বানিয়ে যারা চলাচল করেন তাদের উচিত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। কারণ রেল যখন চলে তখন ১৪৪ ধারা জারি থাকে। ১৪৪ ধারা অমান্য করে কেউ যদি লাইনে উঠে যায় তাহলে অপরাধ তার রেলের নয়। রেল তো বড় গাড়ি। তাই অনেকই না বুঝে রেলে দোষ দেয়।
রেলপথ মন্ত্রী আরো বলেন, রেল যদি নিজের লাইন রেখে অন্যের বাড়িতে ঢুকে পড়ে তাহলে এটা রেল দুর্ঘটনা হবে। তার দায়িত্ব রেল নিবে। তাই রেলে দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। অযথা রেলকে দোষারোপ করলে সমাধান হবে না।
রেলমন্ত্রী আরো বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো রেলের। বঙ্গবন্ধু রেলকে নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহন করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রেলকে সংকোচিত করা হয়। একটি ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। যে দেশ যত উন্নত সেই দেশের রেলপথ তত উন্নত। তাই বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলকে পুর্ণগঠনের জন্য অালাদা মন্ত্রণালয় গঠন করেছেন। রেল মন্ত্রণালয় রেলের উন্নয়নে নতুন নতুন পথ তৈরি করেছে।
মন্ত্রী আরো জানান, আগামী ডিসেম্বরে মোংলার সাথে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেল পথ তৈরী করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল চালু করা হবে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে পর্যটকরা রেলে করে কক্সবাজার যেতে পারবেন।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে রেলওয়ের মহা পরিচালক ডি এন মজুমদার, অতিরিক্ত মহা পরিচালক মঞ্জুরুল আলম, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দীকা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বক্তব্য রাখেন।
পরে তিনি ফিতা কেটে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘরের দেশব্যাপী প্রদর্শনীর শুভ সূচনা করেন। এরপর টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করেন।