Uncategorized
কাশিয়ানীতে জ্বীনের কাণ্ড দেখিয়ে একের পর এক বাড়ি-ঘরে লাগছে আগুন!

কাশিয়ানীতে জ্বীনের কাণ্ড দেখিয়ে একের পর এক বাড়ি-ঘরে লাগছে আগুন!

নিজস্ব প্রতিবেদক:- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে জ্বীনের কান্ড দেখিয়ে একের পর এক বাড়ি ঘরে আগুন ধরে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে একাধিক আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে কাশিয়ানীর নড়াইল গ্রামে। পুলিশ বলছে বিষয়টি তারা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। তবে জ্বীনের কাণ্ড বলে আখ্যা দিয়ে গ্রামের লোকজন তবারক বিতরণ করছে, দিচ্ছে মিলাদও।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম নড়াইল। শান্ত, গাছ গাছালিতে ভরা এই গ্রামের মানুষকে বেশ নম্র ভদ্র বলেই মনে হয়। কদিন আগেও নির্ভয়ে রাত্রি যাপন ছিল এ গ্রামের মানুষের। কিন্তু এখন মানুষের মধ্যে কেবলই আতঙ্ক। কারা এবং কেন এসব ঘরে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তরা তা বলতে পারেন না। তাদের কোন শত্রু নাই এমনটাই তাদের ধারণা। কেন যে তাদের ঘরে আগুন ধরে যাচ্ছে, আর পুড়ে যাচ্ছে সব। বিস্ময়কর হলেও সত্য এসব ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে, তা কেউ দেখতে পারেনি। এমনকি গ্রামে পাহারা বসিয়েও দুষ্কৃতকারীদেরকে ধরা সম্ভব হয়নি। আর এই সুযোগে এসব কর্মকাণ্ড জ্বীনের দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে, এমনটি প্রচার করা হচ্ছে সুকৌশলে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে।

নিরীহ এলাকাবাসীর রাত কাটছে শঙ্কার মধ্যে। রাতের বেলায় ঘুমাতে পারছেন না কেউ। কখন কার বাড়িতে আগুন লেগে যায় এই ভয়ে প্রতিটি রাত কাটছে এলাকাবাসীর। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।

ঘটনার সূত্রপাত গত রবিবার ও সোমবার। দিনের বেলায় ও রাতের বেলায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে হঠাৎ করেই আগুন ধরে যায়। বসতঘর রান্নাঘরসহ একে একে ১৩টি স্থানে আগুন ধরে যাওয়ায় ভাবিয়ে তুলেছে গ্রামবাসীকে।

ভুক্তভোগী ইবাদত খান, রফিক খান ও কাশেম খানের সাথে কথা হলে তারা জানান, তারা আগুন লাগাতে কাউকে দেখেনি। কিন্তু কিভাবে যে তাদের বাড়িঘরে আগুন ধরে যাচ্ছে তারা তা বুঝতে পারছেন না। তারা এমন ঘটনায় ভীত-সন্ত্রস্ত। নিজেরা এখন বাড়িতে থাকতেও ভয় পাচ্ছেন।

অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের কোন নজির নাই। তবে ঘটনার পর থেকে গুজব উঠেছে জ্বীনের কারসাজিতে আগুন ধরছে বাড়িতে। অনেকেই বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্য গ্রামের আত্মীয়দের বাড়িতে। এমনকি বাড়ির পাশের খড়ের গাদা ও পাটকাঠির গাদা সরিয়ে নিচ্ছে অন্যত্র।

কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ আলম বলেন, আগুন রহস্যের কিনারা করতে তদন্ত নেমেছে পুলিশ। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ দায়ের না করলেও আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। দোষীরা যেই হোক তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি। আগুন দেয়ার ঘটনাকে কেউ জ্বীনের কারসাজি বলে চালিয়ে দিয়ে এটাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে ধারণা পুলিশের।

বিগত তিন বছর আগেও কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রামে একই ধরনের ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত তার কূল-কিনারা করতে পারেনি কেউ।


All rights reserved © 2021।। Ajker Kashiani