Uncategorized
কাশিয়ানী সমবায় কর্মকর্তার ‘চাঁদাবাজি’

কাশিয়ানী সমবায় কর্মকর্তার ‘চাঁদাবাজি’

কাশিয়ানী সমবায় কর্মকর্তার ‘চাঁদাবাজি’
কাশিয়ানী সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয় ছবি: আজকের কাশিয়ানী

নিজস্ব প্রতিবেদক:- ‘সমবায়ে গড়ছি দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শনিবার (৪ নভেম্বর) সারা দেশে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত হবে। এরই অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সমবায় দিবস উদযাপন করতে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নিবন্ধিত সমিতিগুলো থেকে চাঁদা আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে ফোন দেওয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন তিনি। জেলা সমবায় কর্মকর্তা বলছেন, সমিতি থেকে চাঁদা তুলে দিবস পালনের নিয়ম নেই।

চাঁদা না দিলে সমিতির নিবন্ধন বাতিল, সরকারি প্রণোদনা ও প্রকল্পের ঋণ বঞ্চিত এবং অডিট আপত্তির হুমকি দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে সমবায় কর্মকর্তা মো. মোরাদ আলীর বিরুদ্ধে। এতে অনেকে সমিতির নিবন্ধন রক্ষা করতে বাধ্য হয়ে চাঁদা দিচ্ছে। চাঁদা আদায় নিয়ে উপজেলার সমবায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের সাড়ে ৩০০ নিবন্ধিত সমবায় সমিতি রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৫০টি সমিতি কার্যকর রয়েছে।

সমিতির সদস্যদের অভিযোগ, সমবায় দিবস উপলক্ষে তাদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা। এসব টাকা অফিসে গিয়ে ও আবার কেউ কেউ বিকাশের মাধ্যমে জমা দিচ্ছে। অনেক সমবায়ীর ধারণা, সামনে কয়েক কোটি টাকা ঋণ প্রকল্প আসবে। দিবস পালনে চাঁদা না দিলে তারা এসব প্রকল্পের ঋণ থেকে বঞ্চিত হবেন।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ঋণদান সমবায় সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সমিতির কার্যক্রম অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছিল। গ্রাহকদের কাছ থেকে ঋণের টাকা আদায় করতে পারেনি অধিকাংশ সমিতি। করোনার পর থেকে লোকসান গুনছে এসব সমিতি। তবুও নিবন্ধন রক্ষা ও বার্ষিক অডিটে (হিসাব-নিরীক্ষা) ঝামেলা এড়াতে কর্মকর্তার দাবি করা টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। দিবস পালনে সরকারি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও সমিতি থেকে চাঁদা আদায় করায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তাদের মাঝে।

সমবায়ী সোবহান বলেন, ‘সমবায় দিবস উদযাপন করতে সমবায় কর্মকর্তা আমার কাছে ৫ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। সহকারী পরিদর্শক আসলাম হোসেন টাকা নিতে এলে আমি এক হাজার টাকা দিই। কিন্তু তিনি তা নিতে রাজি না হলে আমি ৫ হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে ভাউচার চাইলে তিনি এক হাজার টাকা নিয়েই চলে যান।’

সমবায়ী আশরাফ বলেন, ‘সমবায় দিবস পালনের জন্য আমি ৪ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে অফিসে পাঠিয়েছি। আরও লাগলে অফিসে গিয়ে দিয়ে আসব বলে সমবায় কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’

এ ব্যাপারে কাশিয়ানী উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. মোরাদ আলীর বক্তব্য নিতে মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কল কেটে দেন।

জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. নবীউল ইসলাম বলেন, ‘সমিতি থেকে চাঁদা তুলে দিবস পালনের কোনো নিয়ম নেই। তবে সমবায় দিবসটি সমবায়ীদের জন্য। তারাই দিবসটি পালন করেন এবং ওই দিন দুপুরে ভালো খাবারের আয়োজন করা হয়। তবে কোনো সদস্যের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করার সুযোগ নেই।’


All rights reserved © 2021।। Ajker Kashiani