আজকের কাশিয়ানী

আকাশে উড়ে যাচ্ছে হাওরের পানি!

মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকি হাওর এলাকায় দেখা মিলল অদ্ভুত এক দৃশ্যের। শনিবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এ দৃশ্যের দেখা মিলে। এ নিয়ে হাওর পাড়ের মানুষের মধ্যে কৌতুহল দেখা দেয়। শনিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা থেকে স্থানীয় ব্যক্তিরা টর্নেডোর মতো এই দৃশ্য দেখতে পায়।

এমন দৃশ্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এটির দ্বারা কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

জাপানের কাইটো বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রফেসর ড. শি থাইচি হায়াসিসের বরাত দিয়ে সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী বলেন, এটি এক ধরনের টর্নেডো। মূলত টর্নেডোর কারণে এ রকমটি হয়ে থাকে। তবে এ ধরনের ঘটনা সচরাচর কমই দেখা যায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জল দিয়ে মোড়ানো বাতাসের তৈরি টর্নেডোর ফলে এটি সৃষ্টি হয়। জলভাগের ওপর শক্তিশালী টর্নেডো সৃষ্টি হলে প্রবল বেগে ঘূর্ণমান বায়ুর টানে জলভাগের জল টর্নেডোর কেন্দ্র বরাবর স্তম্ভাকারে ঘুরন্ত অবস্থায় ওপরে উত্থিত হয়। একে জলস্তম্ভ (Water Spout) বলে। তবে গ্রামাঞ্চলে এটি ‘মেঘশূর’ নামে পরিচিত।

দেখতে টর্নেডোর মতো হলেও টর্নেডোর সঙ্গে এর মৌলিক পার্থক্য উপাদানে। টর্নেডোতে থাকে বায়ু আর জলস্তম্ভে বায়ুর পরিবর্তে থাকে পানি। জলস্তম্ভ সাধারণত পানিতেই থাকে বলে জনপদে আহামরি ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালাতে পারে না। আর স্থলভাগের স্পর্শে আসলে এটি গুঁড়িয়ে যায়।

আলাপকালে প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েকজন জানান, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকিতে এমন জলস্তম্ভের দেখে আমরা সত্যিই অভিভুত। হাকালুকিতে এমন দৃশ্য খুবই বিরল। জুড়ী উপজেলার বাসিন্দা কুতুব উদ্দিন জসিম জানান, “এমন দৃশ্য বেশ কয়েকবছর আগে হাকালুকিতে দেখা গিয়েছিল বলে শুনেছি। এরপর এমন ঘটনা আজই শুনলাম”। জলস্তম্ভ দ্বারা কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর জানা যায় নি। বিকেলে ঘন্টাখানেক থেকে পরে অন্ধকারে বিলীন হয়ে যায় এটি।