কাশিয়ানীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ আটক, অতপর…

কাশিয়ানীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ আটক, অতপর…

নিজস্ব প্রতিবেদক:- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে হাসপাতালের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পরিবহনের সময় আটকের পর এক কর্মচারীকে মারধরের জেরে মামলা হয়েছে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামির পরিবারের অভিযোগ, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। অসুস্থ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি বাদী। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলছেন, তিনি মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন।

উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের ব্যাসপুর ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের কর্মচারী সাজ্জাদ হোসেনকে মারধর করা হয় ২ এপ্রিল। সেদিন কী হয়েছিল, তার বর্ণনা দেন স্থানীয় ভ্যানচালক আরিফ। তিনি বলেন, ‘ওই দিন ভোরে ব্যাসপুর হাসপাতালের মেয়াদোত্তীর্ণ তিন ভ্যান ওষুধ আটক করে স্থানীয়রা। বিনামূলের ওষুধ রোগীদের না দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ করে ফেলার অভিযোগ তুলে একপর্যায়ে সাজ্জাদকে মারধর করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মারধরের ওই দৃশ্য স্থানীয় এক সাংবাদিক ভিডিও করে সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। পরে কর্মচারী সাজ্জাদ বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেন। রাতে ব্যাসপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে স্থানীয় নায়েব খানকে পুলিশ ডেকে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়। পরদিন সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।’

নায়েব খান সাবেক স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল হক খানের ভাই। মামলার বাদী সাজ্জাদের চাচা হন খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন।

নায়েব খানের স্ত্রী ফাতেমা নায়েবের অভিযোগ, ‘প্রশাসনকে প্রভাবিত করে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে আমার স্বামীকে কারাগারে পাঠিয়েছে। সে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। অথচ যারা জড়িত তারা অধরা। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাদী সাজ্জাদ হোসেনকে ফোন করে পরিচয় জানিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ কাথা বলতে পারতেছি না। পরে কথা বলব।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমি বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমার স্টাফ সাজ্জাদ হোসেনের চাচা সংসদ সদস্য কামাল হোসেন একাধিকবার ফোন করে আমাকে মামলা করতে বলেছেন। পরে আমি মামলার নির্দেশ দিতে বাধ্য হই।’

এ বিষয়ে কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমানের বক্তব্য চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

ব্যাসপুর ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুব্রত নাগ জানান, তিনটি ভ্যানে করে যে ওষুধগুলো নেওয়া হচ্ছিল, সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। আটকের পর সেগুলো আবার ব্যাসপুর হাসপাতালে ফেরত আনা হয়।


All rights reserved © 2021।। Ajker Kashiani